নিম্নে অপরিচিতা গল্পের সৃজনশীল প্রশ্নের উত্তর তুলে ধরা হলো।
গল্পের ‘অপরিচিতা’ চরিত্রটি প্রচলিত নারীর চিত্র থেকে সম্পূর্ণ আলাদা। সাধারণত, সে যুগের নারীরা লাজুক, সংসারমুখী এবং পিতার সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল ছিল। কিন্তু ‘অপরিচিতা’ ছিল আত্মপ্রত্যয়ী, শিক্ষিত এবং নিজ সিদ্ধান্ত নিজেই নিতে সক্ষম। সে কেবল রূপে নয়, বুদ্ধিমত্তা ও আত্মমর্যাদার দিক থেকেও ব্যতিক্রমী। সে বিয়ের মতো গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্তেও নিজস্ব মতামত প্রকাশ করতে দ্বিধা করেনি, যা তৎকালীন নারীদের পক্ষে বিরল ছিল।
Read Best Smart Bangladesh Paragraph For SSC, HSC 2025
গল্পের নায়ক চরিত্রটি সমাজের প্রচলিত পুরুষতান্ত্রিক মানসিকতার প্রতিনিধিত্ব করে। সে নারীদের কেবল বাহ্যিক সৌন্দর্যের মাধ্যমে বিচার করে এবং তাদের শিক্ষাগত যোগ্যতাকে গুরুত্ব দেয় না। যখন সে জানতে পারে যে অপরিচিতা অত্যন্ত শিক্ষিত, তখন সে বিস্মিত ও অস্বস্তিবোধ করে। এটি সমাজে প্রচলিত সেই ধারণাকেই তুলে ধরে যে নারী মাত্রই লাজুক, নম্র এবং স্বামীর অনুগত হবে। অপরিচিতার স্বতন্ত্র ব্যক্তিত্ব এবং বুদ্ধিমত্তা তাকে বিব্রত করে তোলে, যা তার সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
গল্পটি আমাদের সমাজে নারীর অবস্থান ও আত্মমর্যাদার গুরুত্ব তুলে ধরে। এটি দেখায় যে একজন নারী শুধুমাত্র রূপ বা ঐতিহ্যের মধ্যে সীমাবদ্ধ নন, বরং তার শিক্ষার মাধ্যমে আত্মনির্ভরশীল হওয়াই প্রকৃত শক্তি। সমাজের উচিত নারীদের আত্মসম্মানকে মর্যাদা দেওয়া এবং তাদের স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নেওয়ার অধিকার নিশ্চিত করা। গল্পটি নারীর ক্ষমতায়ন ও পুরুষতান্ত্রিক সমাজব্যবস্থার পরিবর্তনের প্রয়োজনীয়তার দিকেও ইঙ্গিত দেয়।
গল্পের নাম ‘অপরিচিতা’ যথার্থ কারণ এটি নায়ক ও সমাজের দৃষ্টিভঙ্গিকে চ্যালেঞ্জ করে। নায়ক প্রথমে অপরিচিতাকে কেবল রূপের মাধ্যমে বিচার করেছিল, কিন্তু পরে বুঝতে পারে যে সে তার প্রকৃত স্বরূপ জানত না। অপরিচিতা শুধু বাহ্যিক সৌন্দর্যে সীমাবদ্ধ ছিল না, বরং সে ছিল মেধাবী, আত্মমর্যাদাসম্পন্ন ও আত্মপ্রত্যয়ী। ফলে, তার প্রকৃত সত্তাকে চিনতে না পারার কারণে সে নায়কের কাছে চিরকাল ‘অপরিচিতা’ই থেকে যায়।
যদি আমি নায়কের জায়গায় থাকতাম, তাহলে অপরিচিতার শিক্ষাগত যোগ্যতা ও আত্মবিশ্বাসকে সম্মান করতাম। তার বুদ্ধিমত্তা ও আত্মনির্ভরশীলতাকে বোঝার চেষ্টা করতাম এবং নারীদের প্রতি প্রচলিত সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গি থেকে বেরিয়ে এসে তাকে একজন ব্যক্তিত্বসম্পন্ন মানুষ হিসেবে দেখতাম। এছাড়া, তাকে শুধুমাত্র বাহ্যিক সৌন্দর্য নয়, বরং তার মনের সৌন্দর্যের জন্যও মূল্যায়ন করতাম।
অপরিচিতা ছিলেন আত্মবিশ্বাসী, শিক্ষিত এবং স্বাধীনচেতা একজন নারী। তিনি প্রচলিত সমাজব্যবস্থার নারীদের মতো পুরুষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল ছিলেন না। বরং তিনি নিজের মতামত প্রকাশে দৃঢ় ছিলেন এবং নারীর মর্যাদার প্রতি সচেতন ছিলেন। গল্পের নায়ক, বিপরীতে, সমাজের প্রচলিত ধারণায় বিশ্বাসী ছিলেন, যেখানে নারীকে বিনয়ী, অনুগত এবং শিক্ষার তুলনায় সৌন্দর্যে বেশি গুরুত্ব দেওয়ার প্রবণতা ছিল। অপরিচিতার আত্মপ্রত্যয়ী মনোভাব নায়কের এই সংকীর্ণ দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে সংঘর্ষ তৈরি করে এবং তাকে একধরনের অস্বস্তিতে ফেলে দেয়।
গল্পের নায়কের মধ্যে বেশ কিছু গুরুত্বপূর্ণ ত্রুটি ছিল:
এই ত্রুটিগুলো শেষ পর্যন্ত তার জন্য শিক্ষা হয়ে দাঁড়ায়, কারণ তিনি বুঝতে পারেন যে নারীকে শুধুমাত্র সৌন্দর্যের ভিত্তিতে বিচার করা ঠিক নয় এবং শিক্ষিত ও আত্মপ্রত্যয়ী নারীর গুরুত্ব উপলব্ধি করা উচিত।
যদি অপরিচিতা সমাজের প্রচলিত ধ্যানধারণা মেনে চলত, তাহলে তিনি হয়তো বিনয়ের ছদ্মাবরণে নায়কের সঙ্গে তার সম্পর্ক গড়তে সম্মত হতেন। তখন নায়ক তাকে কেবল একজন রূপবতী, নম্র নারী হিসেবে দেখত এবং তার ব্যক্তিত্বের গভীরতা উপলব্ধি করতে পারত না। এটি গল্পটিকে এক সাধারণ সামাজিক কাহিনিতে পরিণত করত, যেখানে নারী পুরুষের সিদ্ধান্তের ওপর নির্ভরশীল থাকে। কিন্তু অপরিচিতা তার নিজস্ব আত্মমর্যাদাকে প্রাধান্য দিয়েছেন, যা গল্পের অনন্য বৈশিষ্ট্য।
‘অপরিচিতা’ গল্পের শিক্ষা বর্তমান সমাজের জন্য অত্যন্ত প্রাসঙ্গিক। এখনো অনেক জায়গায় নারীদের আত্মমর্যাদা, শিক্ষা ও সিদ্ধান্ত গ্রহণের ক্ষমতা অবমূল্যায়িত হয়। অনেকেই মনে করে, নারীর প্রধান পরিচয় কেবল তার বাহ্যিক সৌন্দর্যে সীমাবদ্ধ। কিন্তু সময় বদলেছে, এবং এখন নারীরা শিক্ষা, কর্মক্ষেত্র এবং ব্যক্তিত্বের দিক থেকে অনেক বেশি স্বাধীন ও আত্মপ্রত্যয়ী হয়ে উঠছে। তাই গল্পটি আমাদের শেখায় যে নারী-পুরুষের সম্পর্ক পারস্পরিক সম্মানের ওপর ভিত্তি করে হওয়া উচিত এবং শিক্ষিত নারীদের গুরুত্ব দেওয়া উচিত।
গল্পের শেষ দৃশ্যটি পাঠকের মনে এক ধরনের বেদনাবোধ এবং উপলব্ধির অনুভূতি সৃষ্টি করে। নায়ক যখন বুঝতে পারে যে সে ভুল করেছে এবং অপরিচিতাকে চিনতে ব্যর্থ হয়েছে, তখন তার মনে একধরনের অনুশোচনা জন্ম নেয়। অপরিচিতা তার জীবনের পথ নিজেই ঠিক করে নেয়, যা নায়ককে কেবল ‘অপরিচিতা’ হিসেবেই থেকে যাওয়ার উপলব্ধি এনে দেয়। এটি পাঠকের মনে এক গভীর ভাবনার সৃষ্টি করে যে, কখনো কখনো আমাদের সংকীর্ণ মানসিকতার জন্য আমরা জীবনের গুরুত্বপূর্ণ মানুষকে চিনতে ব্যর্থ হই।
স্বাধীনতা দিবস অনুচ্ছেদ অনুসন্ধান করছেন? ২৬শে মার্চ আমাদের স্বাধীনতা দিবস। ঐতিহাসিক এই দিনটি আমাদের জন্য বেশ গৌরবের একটি দিন। সাধারণত…
We covered car accident lawyers in USA. Car accidents can turn your life upside down in an instant. One moment,…
টাকা নিয়ে উক্তি: টাকা আমাদের জীবনের একটি অপরিহার্য অংশ, তবে এটি সুখের একমাত্র মাধ্যম নয়। অনেক জ্ঞানী ও দার্শনিক টাকার…
Denmark vs Netherlands is a common topic. We explained everything about Denmark and Netherlands. When people think of Denmark and…
We covered 10 Ways to Say Thank You in Dutch. Learning to say "thank you" in a new language is…
Mini bikes offer a thrilling ride for both kids and adults. They are compact, versatile, and great for off-road adventures.Mini…