প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে জানেন কী? আপনি যদি প্রতিবেদন লেখার নিয়ম সম্পর্কে না জেনে থেকে থাকেন চিন্তা নেই আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আপনাকে “প্রতিবেদন লেখার নিয়ম” জানানোর পাশাপাশি বিস্তারিত তথ্য জানাবো। সেহেতু আর্টিকেলটি শেষ পর্যন্ত পড়ার অনুরোধ রইল।
তথ্য উপস্থাপনের একটি গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম হলো প্রতিবেদন। এটি শিক্ষা, ব্যবসা, গবেষণা এবং অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যবহৃত হয়। বর্তমান ডিজিটাল যুগে এসেও প্রতিবেদন ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। ভালো একটি প্রতিবেদন তৈরি করতে হলে অবশ্যই আপনাকে সঠিক নিয়ম ও কৌশল অনুসরণ করতে হবে। এই আর্টিকেলে আমরা “প্রতিবেদন লেখার নিয়ম” কীভাবে সঠিকভাবে অনুসরণ করে একটি কার্যকর প্রতিবেদন তৈরি করা যায়, তা বিস্তারিতভাবে আলোচনা করব।
সহজে প্রতিবেদন লেখার নিয়ম
প্রতিবেদন কেবল লিখলেই হবে না বরং প্রতিবেন লেখার কৌশল সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে হবে উক্ত লেখককে। লেখক যদি প্রতিবেদন লেখার কৌশল সঠিকভাবে ব্যবহার করেন তাহলে তার প্রতিবেদনটি সেরার তালিকায় অন্তর্ভুক্ত হয়।
একটি প্রতিবেদন লেখার জন্য নিম্নের ধাপ সমূহ অনুসরণ করতে পারেন:
বিষয় নির্বাচন
প্রতিবেদন তৈরি করার জন্য অবশ্যই “বিষয় নির্বাচন” করা গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবেদন লেখার প্রথম ধাপ হলো বিষয় নির্বাচন। বিষয়টি অবশ্যই পরিষ্কার ও নির্দিষ্ট হওয়া উচিত। বিষয়টি অবশ্যই পাঠকের কাছে সহজবোধ্য হতে হতে হবে। উদাহরণ হিসেবে আমরা এই আর্টিকেলটিকে বলতে পারি আবার “বাংলাদেশে বিদ্যুৎ সংকট: কারণ ও সমাধান” আর্টিকেল।
গবেষণা করুন
কেবলমাএ বিষয় নির্বাচন করে বসে থাকলে হবে না বরং অবশ্যই বিষয়টি সম্পর্কে বিস্তারিত (পূণাঙ্গ) জ্ঞান থাকা আবশ্যক। তবে এই জ্ঞান আহোরণ করার প্রক্রিয়াটকে গবেষণা বলা হয়।
এজন্য বিষয় সম্পর্কে পর্যাপ্ত তথ্য সংগ্রহ করুন। তথ্য সংগ্রহের জন্য বিভিন্ন উৎস ব্যবহার করতে পারেন, যেমন:
- বই
- পোষ্ট/আর্টিকেল/ নিবন্ধ (Articles)
- ইন্টারনেট
- সংবাদপত্র
- গবেষণাপত্র
- সাক্ষাৎকার
- গবেষণা করার সময় তথ্যের নির্ভুলতা এবং প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করুন।
কাঠামো তৈরি
গবেষণা ধাপটির পরবর্তীধাপে অবশই জ্ঞান আহরন করে কাঠামো তৈরি করতে হবে অর্জিত জ্ঞানের দ্বারা। অবশ্যই প্রতিবেদনের জন্য একটি সুসংগঠিত উন্নত কাঠামো তৈরি করুন। একটি উন্নত প্রতিবেদনের কাঠামো হলো:
- শিরোনাম পৃষ্ঠা : প্রতিবেদনের শিরোনাম, লেখকের নাম, তারিখ ও প্রতিষ্ঠানের নাম উল্লেখ করুন। শিরোনাম আকর্ষণীয় হলে পাঠকের আগ্রহ বৃদ্ধি পায়।
- সারাংশ (Executive Summary) : প্রতিবেদনের মূল বিষয় সংক্ষেপে উল্লেখ করুন। আলোচয় বিষয় প্রথমেই জানিয়ে দিলে পাঠকের মাঝে বিশ্বাস ও একাগ্রতা সৃষ্টি হয়।
- সূচিপত্র (Table of Contents) : প্রতিবেদনের অধ্যায় এবং পৃষ্ঠা সংখ্যা উল্লেখ করুন। পাঠক তার প্রয়োজন অনু
- ভূমিকা (Introduction) : প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য এবং প্রেক্ষাপট ব্যাখ্যা করুন। খেয়াল রাখবেন অবশ্য ভূমিকা প্রতিবেদন অনুযায়ী হতে হবে।
- মূল বিষয়বস্তু (Body) : বিষয়টি বিস্তারিতভাবে আলোচনা করুন। এখানে কারণ, প্রভাব এবং তথ্য উপস্থাপন করুন। পাঠকের নিকট তথ্য প্রতিবেদন এর চাহিদা অনুযায়ী শেয়ার করুন।
- উপসংহার (Conclusion) : মূল বিষয়গুলো সংক্ষেপে তুলে ধরুন ও আপনার মন্তব্য প্রয়োজনে পাঠকের নিকট জানাতে পারেন।
- সুপারিশ (Recommendations) : সমস্যার সমাধানের জন্য সুপারিশ দিন, এক্ষেত্রে অবশ্যই খেয়াল রাখা উচিত।
আরো জানতে পারেন: দাগ নাম্বার দিয়ে জমির মালিকের নাম যাচাই
সহজ ভাষা ব্যবহার
প্রতিবেদনে অবশ্যই সহজ ভাষা ব্যবহার করা উচিত। এক্ষেত্রে আপনি যদি বাংলা ভাষায় প্রতিবেদন তৈরি করে থাকেন তাহলে চেষ্টা করবেন চলিত শুদ্ধ ভাষায় প্রতিবেদন লেখার। প্রতিবেদন লেখায় কখনো আঞ্চলিক ভাষা ব্যবহার করা উচিত না। পাঠকের সুবিধার্থে সহজে বুজতে পারে এমন শব্দ ব্যবহার করা উচিত।
তথ্যের সঠিক উপস্থাপন
প্রতিবেদন অবশ্যই সঠিক হতে হবে। তথ্যের সঠিক উপস্থাপনের জন্য আপনি চিত্র, টেবিল এবং গ্রাফ ব্যবহার করুন। এটি পাঠককে তথ্য সহজভাবে বুঝতে সাহায্য করে। উদাহরণ: বায়ু দূষণের হার দেখানোর জন্য গ্রাফ ব্যবহার করা যেতে পারে আবার বৈজ্ঞানিক তথ্য উপস্থাপন করা যেতে পারে।
সম্পাদনা ও পর্যালোচনা
প্রতিবেদন কেবল মাএ লিখলেই তো হবে না বরং সেটি সর্বশেষ ধাপে পর্যালোচনা করা প্রয়োজন আছে। প্রতিবেদন লেখার পর যদি ভুল থাকে তাহলে তা সম্পাদনা করুন। বানান ও ব্যাকরণের ভুল চেক করুন। নিশ্চিত করুন যে প্রতিবেদনটি সুসংগঠিত এবং তথ্য নির্ভুল।
প্রতিবেদন লেখার কৌশল
প্রতিবেদন লেখার ক্ষেত্রে কেবল মাএ সনাতন পদ্ধতি অনুসরণ না করে আপনি কিছু কৌশল অনুসরণ করতে পারেন। এ সকল কৌশল প্রতিবেদন লেখা দ্রুত শেষ ও আরও সহজ হয়:
- সুস্পষ্ট শিরোনাম : শিরোনামটি পরিষ্কার ও সংক্ষিপ্ত হওয়া উচিত।
- ভূমিকা আকর্ষণীয় করুন : ভূমিকায় প্রতিবেদনের উদ্দেশ্য ও প্রেক্ষাপট উল্লেখ করুন।
- সংক্ষিপ্ত সারাংশ : প্রতিবেদনের মূল পয়েন্টগুলো সংক্ষেপে তুলে ধরুন।
- উপসংহার ও সুপারিশ: প্রতিবেদনের সমাপ্তিতে প্রধান বিষয়গুলো পুনরায় উল্লেখ করুন এবং সম্ভাব্য সুপারিশ প্রদান করুন।
শেষ কথা
প্রত্যাশা করি আজকের এই আর্টিকেলের মাধ্যমে আজ আমরা আপনাকে “প্রতিবেদন লেখার নিয়ম “ সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানাতে পেরেছি। যদি এই আর্টিকেলটি সম্পর্কে আপনার কোন প্রশ্ন থাকে তাহলে আপনি আমাদের কমেন্টের মাধ্যমে আপনার মতামত জানাতে পারেন।
আরো জানতে পারেন: চিয়া সিডের উপকারিতা ও অপকারিতা
(সর্বশেষ আপডেট পেতে আমাদেরকে Google News এ অনুসরণ করুন)